
দিদার হেঁসেল আসলে আমার মায়ের স্বপ্ন। মা শিবানী মাইতি।
মায়ের বয়ানে:
আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিলো একটা রেস্টুরেন্ট করার। কারণ আমি রান্না করতে খুব ভালোবাসি। এমন একটা প্লাটফর্ম হবে যেখানে আমি নিজে রান্না করে খাওয়াবো সবাইকে।
২০১৯ সালে আমরা বাংলাদেশ যাই, এবং সেখানে নানারকমের ভর্তা খাই।
আমি নানান রকমের ভর্তা তো জানতামই,কারণ আমি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের। মানে আমার মা বাবার বাড়ি বাংলাদেশে ছিলো। তাদের কাছ থেকেই আমার সব রান্না শেখা। তা সেই সময় মনে হলো, এই রান্না গুলো করে যদি সবাই কে খাওয়ানো যায়!
কিন্তু কিভাবে?
২০২০তে মহামারি কোভিড এলো আমাদের দেশে। সেই সময় ক্লাউড কিচেন এর কনসেপ্ট আসলো। কোভিড আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে, আবার দিয়েছেও অনেক কিছু। আমাকে ক্লাউড কিচেন দিয়েছে। প্রথম ২০২২ এ ২১ ফেব্রুয়ারিতে আমরা, ক্লাউড কিচেন শুরু করলাম। আমাদের ট্যাগ লাইন হলো,
"ভাষার দিনই,আসার দিন" আমার ছেলে অনির্বাণ মাইতি র লেখা। আর দিদার হেঁসেল নাম দিয়েছেন শুভেন্দু মাইতি।আমাদের সমস্ত কাজে সহায়তা করা, আমাদের মেন্টাল সাপোর্ট দেওয়া যে মানুষ টি না থাকলে আমাদের দিদার হেঁসেল করা হয়ে উঠতো না,আমাদের পারিবারিক বন্ধু অভিষেক।
এছাড়াও রয়েছে আমার বৌমা মৌ ও ওর বোন স্নেহা।
আমাদের পোষ্টার গুলো স্নেহা করে থাকে।
দিদার হেঁসেল আসলে সমস্ত ঠাকুমা দিদদের সন্মান জানিয়ে রাখা নাম। যাদের legacy আমরা বহন করে চলেছি।
ভবিষ্যৎ নিয়ে যে ভাবনা, তা একটু অন্যরকম।
অন্যরকম মানে এখানে বসেই মানুষ যেন খেতে পারেন, একটু বড়ো জায়গা নিয়ে। রান্না জন্য কাউকে নেবো না। অন্যান কাজের সাহায্য কারি থাকবে। রান্না কারোর হাতে দিলে সেটা তার হাতের রান্না হবে। সেটা তো আমাদের রান্না থাকবে না।
দিদার হেঁসেল এর খাবার মানুষ ভালোবেসে নিচ্ছেন আমাদের হাতের রান্না খাবেন বলে। সেই জায়গায় তাদের বঞ্চিত করবো না।
এছাড়াও যে ইচ্ছে আছে সমস্ত রান্না লিপিবদ্ধ করে রেখে যাওয়ার কাজ করা। যাতে রান্না গুলি হারিয়ে না যায়। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই রান্না গুলি রেখে যাওয়া।
ভবিষ্যতে বিভিন্ন জেলার রান্না নিয়েও কাজ করার ইচ্ছে আছে।
The Recipe
রেসিপি - কচুপাতা-চিংড়িভাপা
উপকরণ :
চিংড়িমাছ- 300গ্রাম
দুধকচুরপাতা- 7টা মতো
কালো সরষে- 2চামচ
সাদা সরষে- 2চামচ
পোস্ত- 1চামচ
কাজুবাদাম- 8টা
নারকেল কোরা- হাফ মালা
কাঁচালঙ্কা- 4/5টা
সরষের তেল- চার টেবিলচামচ মতো।
নুন, হলুদ- পরিমান মতো।
প্রণালী:
প্রথমে চিংড়িমাছ ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে নিয়ে নুন হলুদ মাখিয়ে রেখে দিতে হবে।
তারপর দুধকচুর পাতা ভালো করে ভাপিয়ে নিয়ে জল ফেলে নিতে হবে।
এরপর দু'রকম সরষে, পোস্ত, কাজু, নারকেলকোরা, কাঁচালঙ্কা, নুন, হলুদ সব একসঙ্গে মিক্সিতে বেটে নিতে হবে এবং ভাপিয়ে নেওয়া কচুপাতা গুলো দিয়ে আরেকবার বেটে নিতে হবে।
এরপর পুরো মিশ্রণটা চিংড়িমাছের মধ্যে দিয়ে তার সঙ্গে সরষের তেল মিশিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিতে হবে।প্রয়োজন হলে স্বাদ অনুযায়ী আরো একটু নুন হলুদ দিতে হবে।
তারপর একটি কড়ায় জল গরম করতে দিয়ে তার ওপর একটি স্ট্যান্ড দিতে হবে।
অন্যদিকে একটি ঢাকনাওলা বাটিতে ভালো করে সরষের তেল মাখিয়ে নিয়ে তাতে মিশ্রণটি ঢেলে দিয়ে বাটির মুখ বন্ধ করে স্ট্যান্ডের ওপর রেখে কড়ায় চাপা দিয়ে 25মিনিট স্টীমে বসিয়ে রাখতে হবে। তারপর আঁচ বন্ধ করে মিনিট দশেক স্ট্যান্ডিং টাইম দিয়ে ঢাকনা খুললেই তৈরি হয়ে যাবে গরম গরম কচুপাতা-চিংড়ি ভাপা।
যা গরম ভাতের সঙ্গে জমে যাবে।❤️